এসি মেশিন ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবন ও পরিবেশের উপর প্রভাব
প্রবল গরমে একজন ব্যক্তি যখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের তাপমাত্রা ছেড়ে বাইরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় যায় তখন বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় তার হাতে থাকে না। কারণ বাইরের তাপমাত্রার থেকে এসি বসান ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবে ১৫-২০ ডিগ্রিরও বেশি ফারাক থাকে। বিশেষত দিনের বেলায়। ফারাকই শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
যদি দীর্ঘ সময় এসির মধ্যে থাকা হয় তাহলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ঘাম হওয়া কঠিন হয়। দীর্ঘ সময় এসিতে থাকা বয়স্ক, তরুণ ও ডায়াবেটিশ রোগীজের জন্য সমস্যার । এই ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘ সময় যদি আপনি এসিতে থাকেন তাহলে জল বা যেকোনও তরল পানীয় গ্রহণের ইচ্ছে কমে যায়। কিন্তু এসি থেকে বেরিয়ে গেলে অস্বস্তি বাড়ে। তখন তৃষ্ণা নেকটাই বেড়ে যায়। শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়।
বাস্তবে শহরে শীতাতপনিয়ন্ত্রণে থাকতে অভ্যস্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ৃছে- যারা তাপজনিত রোগে বেশি আক্রন্ত হচ্ছে। কারণ এয়ারকন্ডিশানে বেশিক্ষণ থকলে ঘাম হয় না। পাল্টা তারা যখন বাইরে যায় তখন প্রবল ঘাম হয়, অস্বস্তি বাড়ে। শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। এরাই অনেক সময় হিটস্ট্রোক , হিট পাইরেক্সিয়া, হিটস্ক্র্যাপ – জাতীয় রোগে আক্রান্ত হয়।
এয়ারকন্ডিশানের ব্যবহার পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ বর্তমানে খাবার, ওষুধ, প্রযুক্তি উৎপাদন, সঞ্চয়, পরিবহন- একাধিক ক্ষেত্রে রেফ্রিজারেশন গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীদের মনে ২০২৫ সালের মধ্যে এসির জন্য শক্তি খরচ তিন গুণ হবে।
এসি মেশিন থেকে বেরোয় হাইড্রো ফ্লুরো কার্বন এবং ক্লোরো ফ্লুরো কার্বন এই গ্যাসগুলি পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর গ্রিন হাউজ গ্যাসের তালিকায় পড়ে এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য দায়ী । তাই এসি কেনার সময় এনার্জি এফিসিয়েন্সি সার্টিফিকেট দেখে নিন – হাইড্রো ফ্লুরো কার্বন এবং ক্লোরো ফ্লুরো কার্বন ফ্রি এসি কিনুন ।
অন্যদিকে এসির কারণে পরিবেশের তাপমাত্রা বাড়ছে। শহর এলাকায় রাতের বেলা অত্যাধিক এসি ব্যবহারের জন্য বাইরের তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। এসির ঠান্ডা হাওয়ায় আরাম বাড়ুক তার সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতাও।