সাইক্লোন ডানা বঙ্গোপসাগরে বুকে সৃষ্টির ১৬-১৭ দিন আগে প্রেডিক্ট করেছিলাম যে “অক্টোবর শেষ থেকে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের বুকে সাইক্লোন সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং তার প্রভাবে আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে” ।
তখন অনেকেরই প্রশ্ন ছিল এই”স্বাভাবিক” ব্যাপার বলতে কি বোঝাতে চেয়েছি । বর্তমানে সাইক্লোন “ডানা” পর্ব মিটে যাওয়ার পর ওই “স্বাভাবিক” ব্যাপারটা নিয়ে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করছি এখানে ।
এল নিনো এবং লা নিনা নিয়ে পূর্বে বেশ কয়েকটি লেখায় আলোচনা করেছি নতুন করে আর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিচ্ছি না এখানে শুধু এটা বলে রাখি এল নিনো হলো উষ্ণ স্রোত এবং লা নিনা শীতল স্রোত। ২০২২ সাল থেকে টানা তিন বছর ধরে এল নিনো এফেক্ট চলছিল (এর আগে এমন ঘটনা খুব কম ঘটেছে) আবহাওয়াবিদদের পর্যালোচনায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগেই এল নিনো এফেক্ট শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল । কিন্তু প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম ভাগ থেকে আফ্রিকা মহাদেশ পর্যন্ত বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারিল না । এই স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার জন্য প্রয়োজন ছিল ভারত মহাসাগর, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরের বুকে পর পর কয়েকটি ঘূর্ণাবর্ত যা উষ্ণতাকে নিয়ন্ত্রণ করত ।
জুন-জুলাই মাস থেকেই সাগরে ঘূর্ণাবর্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে । পর পর কয়েকটি ঘূর্ণাবর্ত চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরে সৃষ্টি হয় । শুধু প্রয়োজন ছিল আরব ও বঙ্গোপসাগরের বুকে একটা সাইক্লোন।
এল নিনো এফেক্ট শেষ হওয়ার পর আসে লা নিনা । সেই পথ সুগম হয়েছে বলা চলে । লা নিনা এফেক্ট যা শীতল স্রোত বয়ে আনে যার প্রভাবে সমগ্র দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকা জুড়ে উষ্ণতার প্রভাব কমিয়ে ঠান্ডা করতে সক্ষম হবে । পূর্বে যা অনুমান করা হয়েছিল তাতে ঠান্ডা ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ প্রভাব ফেলবে । এক্ষেত্রে আগামী ২০-২২ দিনেই দেশ জুড়ে ঠান্ডার প্রভাব বিস্তার করবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে । উষ্ণায়ন কমবে, তবে হ্যাঁ, লা নিনা এফেক্টের জন্য সাইক্লোন বা ঝড় বৃষ্টির সংখ্যা ও পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে ।
ধন্যবাদ
নেচার এন্ড ওয়েদার ওয়ার্ল্ড